ইগো এবং রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

কিভাবে নিজের ইগো এবং রাগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়?

একটা সিচুয়েশনের কথা চিন্তা কর। তুমি একদিন একটু দেরি করে ঘুম থেকে উঠলে।তোমার ক্লাসের জন্য দেরি হয়ে যাচ্ছে,এবং তুমি নিজের উপর ভীষন বিরক্ত।এমন সময় তোমার ছোট বোন তোমার কাছে এসে দুষ্টুমি করছে,এবং তুমি তাকে একটা ধমক দিলে।বাচ্চা মেয়েটা কাদতে কাদতে চলে গেলো।এ দেখে তোমার মা খেপে গেলেন এবং মায়ের সাথে কথা কাটাকাটি করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ক্লাসের জন্য বাস ধরলে।এরপরে মেজাজ তিরিক্ষি করে তুমি দেখলে ক্লাসে লেইট করে এসেছ এবং টিচার তোমার এটেন্ডেন্স দেন নাই।এরপর আরো মেজাজ খারাপ করে তুমি তোমার সিটি দিতে বসলে এবং সেই পরীক্ষাটাও তোমার মুড খারাপের জন্য ভালো হল না।দিনশেষে দেখা গেলো যে সিটির জন্য পড়তে গিয়ে রাত পার করে ভোর বেলা ঘুমুতে গেলে এবং যেটার জন্য ক্লাস লেইট হলো,সে সিটি টাই ভালো হল না।

এখন কিছু ব্যপার খেয়াল করঃ

১. তুমি যদি বোনের দুষ্টুমি তে রিয়েক্ট না করতে তাহলে কি হত?
২. ক্লাসে লেইট হওয়া প্রতি তোমার রিয়েকশন কেমন ছিলো?

অনেক সময় কিছু লাইফ ইভেন্ট আমাদের এক্সপেকটেশন অনুযায়ী হয় না।তখন আমাদের বেছে নিতে হবে যে আমাদের আচরন কি রিয়েক্টিভ হবে নাকি রেস্পন্সিভ হবে।ঘটনাপ্রবাহ কে একদম শুরু থেকে কল্পনা করা যাক।

ধরে নাও,তোমার ঘুম থেকে উঠতে দেরি হলো।তোমার এক্ষেত্রে রেস্পন্সিভ আচরন কেমন হওয়া উচিত?তোমার নিজের সাথে কথা টা কেমন হওয়া উচিত? আমি গতকাল রাতে খুব কম ঘুমিয়েছি বলেই আজকে একটু দেরি হল।এখন থেকে সকালে ক্লাস থাকলে একটু তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাবো।নিজের প্রতি কঠিন হলে তোমার মধ্যে বিরক্তির মত নেগেটিভ ইমোশন জন্ম নেয়। যার কারনে তুমি তোমার নিজের উপর হওয়া বিরক্তি তোমার কাছে ইনফেরিওর, এমন মানুষের উপর প্রজেক্ট কর।এক্ষেত্রে,ইনফেরিওর মানুষ টা হল তোমার ছোটবোন।একেই বলা হয়,একজনের উপর হওয়া রাগ,ক্ষোভ অন্যজনকে দেখানো।

এখন ক্লাসে লেইট হওয়া প্রসংগে আসো।তোমার ক্লাসে লেইট হওয়ার ইন্সিডেন্ট এর প্রতি রেস্পন্সিভ আচরন কেমন হওয়া উচিত ছিল?
একদিন ক্লাস লেট হতেই পারে।স্বাভাবিক।এখন ক্লাস টা মনোযোগ দিয়ে করে সিটি ভালো করে দেওয়ার চেষ্টা করি।এই ধরনের পজিটিভ সেল্ফ টক তোমার মধ্যে বিদ্বেষ,ক্ষোভ এইসব নেগেটিভ ইমোশন জমতে দেয় না।যার কারনে তুমি নিজের এবং আশেপাশের মানুষের প্রতি জেন্টাল থাকো।

নিজের ইগো এবং রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়
নিজের ইগো এবং রাগ নিয়ন্ত্রণ করার উপায়

হঠাৎ করে রাগ উঠলে কি কি করা উচিতঃ

  • দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় থাকলে,বসে যাওয়া ভাল।
  • যদি সম্ভব হয়,তাহলে একটা শাওয়ার নিলে ভাল লাগতে পারে।
  • একটু সজাগ থাকো,তোমার রাগের ট্রিগার পয়েন্ট গুলো খুজে বের করে সেগুলো নিয়ে কাজ করা যেতে পারে।
  • তোমার রাগের মাথায় করা আ্যকশন এর পরিনতি কি হতে পারে, সেটা নিয়ে অবসর সময়ে চিন্তা করে আচরন পরিবর্তন করার চেষ্টা করা যেতে পারে।
  • নিজেকে ক্ষমা করার চেষ্টা করতে পারো,যার উপর রাগ,তাকে ক্ষমা করার চেষ্টা করা উপকারী হতে পারে।
  • মনে রাখবে, রাগ খুব সহজাত একটা ইমোশন।এটা আসবেই।কিন্ত এই রাগ কে আমাদের কন্ট্রোল করতে যদি স্বাস্থ্যকর কোন উপায় বের করা যায় তাহলে সেটাতে সবার ভাল হবার সম্ভাবনাই বেশি।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *