দুশ্চিন্তা দূর করার উপায়

তোমার হয়তো সামনে কোন পরীক্ষা /চাকরির ইন্টারভিউ অথবা কোন লাইফ চেইঞ্জিং ইভেন্ট আছে। তোমার আশা হয়তো আকাশচুম্বী,কিন্তু তোমার এই ভেবে দুশ্চিন্তা হচ্ছে যে, “সব ঠিক ঠাক ভাবে না হলে কি হবে!” দুশ্চিন্তা একেকজন কে একেকভাবে প্রভাবিত করে। তোমার যদি দুশ্চিন্তা কাটাতে বেশি সময় না লাগে এবং তুমি যদি খুব দ্রুত দুশ্চিন্তার সাইকেল থেকে বর্তমানে ফিরে আসতে পারো, তাহলে তুমি দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণে দক্ষ হয়ে উঠছো। কিন্তু সিচুয়েশন টা যদি এমন না হয় এবং দুশ্চিন্তা যদি তোমার পারসোনাল, একাডেমিক অথবা প্রফেশনাল লাইফের উন্নতির অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়,তাহলে তোমার প্রফেশনাল সাইকোলজিক্যাল হেল্প লাগতে পারে।

দুশ্চিন্তা অর্থঃ

যখন কোন ঘটনা অথবা সিচুয়েশনের কথা ভাবলে তোমার ভয় /প্যানিক হয়, হাত পা ঘামা,কাপাকাপি শুরু হয়ে যায় এবং সেগুলো যদি তোমার প্রতিদিনের কাজ / প্রোডাক্টিভিটি কে বাধাগ্রস্ত করে,তাহলে তুমি দুশ্চিন্তা অর্থাৎ আ্যনজাইটি তে ভুগছো।

দুশ্চিন্তা এবং ভয়ের লক্ষণ কি?

দুশ্চিন্তা দূর করার খাবারঃ

  1. ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবারঃ ভিটামিন-ডি এর অভাব মানুষকে ডিপ্রেশন এবং দুশ্চিন্তার দিকে ঠেলে দিতে পারে।ভিটামিন ডি এর সাপ্লিমেন্ট নেওয়া অথবা সঠিক পরিমানে ফ্যাটি ফিশ যেমনঃ স্যামন,টুনা খাওয়া যেতে পারে।এছাড়াও কমলালেবু, চিজ,দধি, ডিমের কুসুম,গরুর দুধ ইত্যাদি খাবার তোমার ডেইলি ডায়েট রুটিনে রাখলে ভিটামিন-ডি এর অভাব পূরন হবে।
  2. ডার্ক চকলেটঃ ডার্ক চকলেটে ফ্লেভনয়েড আছে,যা মস্তিষ্কে নিউরো-ইনফ্লামাশেন এবং সেল-ডেথ কমাতে সাহায্য করে।এছাড়াও ডার্ক চকলেটে টিপটোফ্যান আছে যেটা মস্তিষ্কে সেরাটনিনের মত মুড-ইনহ্যান্সিং নিউরোট্রান্সমিটার সঞ্চারন করতে সাহায্য করে।
  3. গ্রিন টিঃ গ্রিন টি তে থিয়ানিন নামের আ্যমিনো এসিড আছে যেটাতে আ্যন্টি-আ্যনজাইটি ইফেক্ট আছে। গ্রিন টি পান করলে মেজাজ শান্ত এবং স্হিতিশীল হয়।
  4. বিভিন্ন ধরনের বাদামঃ কাজুবাদামে ভিটামিন-ই আছে যেটা মুড ডিজ-অরডারে সাহায্য করে।

দুশ্চিন্তা দূর করার ব্যয়ামঃ

  1. বিভিন্ন ব্রিদিং এক্সারসাইজ করা। একটা হাত তোমার বুকে, এবং আরেক টা হাত পেটে রেখে নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়া।শ্বাস গ্রহনের সময় পেট প্রসারিত হবে।এবং শ্বাস গ্রহণ শেষে মুখ দিয়ে শ্বাস ত্যাগ করতে হবে।এই ব্যায়াম টা ১০ মিনিট করাই যথেষ্ট।
  2. মাংসপেশী গুলো শিথিল করা। দুশ্চিন্তা করাএ সময় তোমার চোয়াল দৃঢ় হয়ে আছে কিনা লক্ষ্য কর।হাত মুষ্টিবদ্ধ থাকলে ছেড়ে দাও। যেকোন মাসল টেনশন থাকলে তা শিথিল কর।
  3. চোখ বন্ধ করে নিজেকে খুব সুন্দর কোন জায়গাতে কল্পনা করে নিজেকে রিল্যাক্স করা।

দুশ্চিন্তা মুক্ত নতুন জীবন নিয়ে ডেল কার্নেগির ” স্টপ ওরিং আ্যন্ড স্টার্ট লিভিং” বইয়ের নির্দেশনাঃ

ডেল কার্নেগির ” স্টপ ওরিং আ্যন্ড স্টার্ট লিভিং” বই এ দুশ্চিন্তাহীন সুখী জীবনের জন্য কিছু নির্দেশনা আছে ।

  1. প্রথম শিখন হলো, বর্তমানে থাকা।অতীতের কিছু ভুল অথনা অনাকাঙ্ক্ষিত দূর্ঘটনা নিয়ে চিন্তা করা অথবা ভবিষ্যতে খারাপ কিছু ঘটতে যাবে, এই ভেবে বর্তমানের সময় টা নষ্ট করে ফেলা থেকে দূরে থাকতে হবে।তুমি হয়তো নতুন জব লাইফে প্রবেশ করেছো। তোমার হয়তো অনেক দায়িত্ব এসে পরেছে কাধের উপর।তুমি নতুন চাকরি তে ঢুকেই চ্যালেঞ্জ ফেইস করছো।এবং “চাকরি যদি চলে যায়” এই চিন্তায় তোমার প্রোডাক্টিভিটি কমে যাচ্ছে এবং এই কারনে আসলেই তুমি কর্মজীবনে ভালো পারফর্ম করছো না। এই ক্ষেত্রে তুমি নিজেকে প্রশ্ন কর, ” আসলেই কি তোমার চিন্তা যুক্তিযুক্ত? চাকরি যদি আসলেই চলে যায় তাহলে তুমি কি করতে পারো, তোমার কোন সাপোর্ট সিস্টেম অথবা সেভিংস আছে ?” এই ধরনের সেল্ফ হেল্প প্রশ্ন করে নিজেকে যেই সিচুয়েশনের জন্য দুশ্চিন্তা করছো,তার জন্য প্রস্তুত করতে পারো।
  2. দ্বিতীয় শিখন হল, যে কোন চিন্তা থেকে মন কে দূরে রাখার জন্য ব্যাস্ত থাকো। একটা শখের কাজ করতে পারো,ব্যায়াম করাও বেশ ভালো একটা উপায় হতে পারে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির জন্য।
  3. তৃতীয়ত, যে ইভেন্ট গুলো তোমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে,সেগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তা না করা।তোমাকে নিয়ে কে কি ভাবছে,সেটার উপর তোমার নিয়ন্ত্রণ নেই। সুতরাং, যে জিনিসের উপর তোমার নিয়ন্ত্রণ নেই,সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা না করাই উত্তম।নিজেকে প্রশ্ন কর,”এই চিন্তা কি আসলেই আমার এত সময় এবং মনোযোগ এর যোগ্য?” যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত সময়ে তোমার সেই সময়ে কোপ-আপ করার সক্ষমতা তোমাকে সফলতার দিকে নিয়ে যাবে।
  4. চতুর্থ শিখন হল, সবমসময় নিজের জীবনের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। কি কি না পেলাম,এই চিন্তায় না থেকে কি কি পেলাম,সেদিকে ফোকাস করা।এভাবে কিছু মানসিক অভ্যাস গড়ে তুললে জীবিনকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখা সম্ভব।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *