ডিপ্রেশন নাকি সাময়িক মন খারাপ? সহজে বুঝুন এবং ব্যবস্থা নিন
আপনি কি কখনও এমন অনুভব করেছেন যে কিছুতেই ভালো লাগছে না, সবকিছু যেন অর্থহীন? বর্তমান সময়ে সবচেয়ে কমন এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হলো ডিপ্রেশন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) জরিপে দেখা যায়, বর্তমানে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ৪.১%, অর্থাৎ প্রায় ৬,৩৯১,৭৬০ জন মানুষ ডিপ্রেশনে ভুগছে। তবে, অনেকেই ডিপ্রেশনের প্রকৃত অর্থ এবং লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন নন। চলুন জেনে নেই ডিপ্রেশনের ধরন, লক্ষণ এবং এর থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়।
ডিপ্রেশন আসলে কী?
অনেকেই মন খারাপ থাকা বা কোনো কাজ করতে ভালো না লাগাকে ডিপ্রেশন মনে করেন। তবে সাইকোলজিস্টদের মতে, ডিপ্রেশন মানে শুধু মন খারাপ নয়। এটি একটি মুড ডিসওর্ডার, যা দীর্ঘসময় ধরে ব্যক্তির মানসিক ও দৈনন্দিন জীবনে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।
ডিপ্রেশনের প্রকারভেদ:
👉 Major Depressive Disorder (MDD)
👉 Seasonal Affective Disorder (SAD)
👉 Persistent Depressive Disorder (PDD)
👉 Postpartum Depression
এর মধ্যে Major Depressive Disorder (MDD) সবচেয়ে বেশি লক্ষণীয়।
Major Depressive Disorder (MDD) এর লক্ষণসমূহ:
American Psychiatric Association (APA) এর মতে, MDD নির্ণয়ের জন্য অন্তত দুই সপ্তাহ ধরে নিম্নলিখিত ৫টি বা তার বেশি উপসর্গ থাকতে হবে:
- দিনের বেশিরভাগ সময় মন খারাপ বা শূন্যতা অনুভব
- কাজ বা আনন্দের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলা
- উল্লেখযোগ্যভাবে ওজন হ্রাস বা বৃদ্ধি
- ঘুমের সমস্যা—অনিদ্রা বা অতিরিক্ত ঘুম
- অস্থিরতা বা ধীর গতি
- দীর্ঘসময় ক্লান্তি অনুভব
- নিজেকে মূল্যহীন বা অপরাধবোধে ভোগা
- মনোযোগহীনতা বা সিদ্ধান্তহীনতা
- বারবার মৃত্যুর চিন্তা বা আত্মহত্যার চেষ্টা
এই উপসর্গগুলো যদি আপনার দৈনন্দিন কাজ, সম্পর্ক, বা পেশাগত জীবনে প্রভাব ফেলে, তবে দ্রুত একজন সাইকোলজিস্ট বা সাইকিয়াট্রিস্টের পরামর্শ নিন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ডিপ্রেশন
বাংলাদেশে সামাজিক এবং পারিবারিক চাপে ডিপ্রেশন অনেক সময় অন্যভাবে প্রকাশ পায়। অনেকেই শারীরিক লক্ষণ যেমন মাথাব্যথা, পেটে ব্যথা, বা হঠাৎ মেজাজ খারাপের মাধ্যমে মানসিক চাপ প্রকাশ করেন। এই বিষয়গুলো বুঝতে পারা এবং সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ডিপ্রেশন ম্যানেজ করার ৫টি সহজ উপায়:
আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিচের পদ্ধতিগুলো চেষ্টা করতে পারেন:
💚 নিজের প্রতি যত্নশীল হোন: যে কাজগুলো আনন্দ দেয়, সেগুলোতে মনোযোগ দিন।
💚 পরিবারের সাথে ইতিবাচক সম্পর্ক গড়ে তুলুন: পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটান।
💚 বন্ধুদের সাথে সংযোগ বজায় রাখুন: আপনার অনুভূতিগুলো ভাগ করে নিন।
💚 নিজের সমস্যাগুলো কাছের মানুষদের বলুন: হতাশা প্রকাশ করা মানসিক চাপ কমায়।
💚 চাপ কমান: পড়াশোনা বা কাজের অতিরিক্ত চাপ এড়িয়ে চলুন।
রিল্যাক্সি: মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য আপনার সঙ্গী
নিজেদের ভালো রাখার পাশাপাশি, যদি উপসর্গগুলো আপনার জীবনকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করে, তবে একজন বিশেষজ্ঞ সাইকোলজিস্টের সাথে যোগাযোগ করুন।
রিল্যাক্সি আপনাকে ঘরে বসেই সেরা সাইকোলজিস্টদের সাহায্য নিতে সুযোগ করে দিচ্ছে। আমাদের বিশেষজ্ঞরা আপনাকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে প্রস্তুত।
রিল্যাক্সি প্ল্যাটফর্মের বিশেষত্ব:
- দেশের সেরা সাইকোলজিস্টদের সাথে অনলাইন সেশন
- সময়মতো অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং
- গোপনীয়তা নিশ্চিত
রিল্যাক্সি অ্যাপ ডাউনলোড করুন এখানে ক্লিক করে
মানসিক স্বাস্থ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ডিপ্রেশনের লক্ষণগুলো বুঝতে পারলে আপনি যেমন নিজের প্রতি সচেতন হতে পারবেন, তেমনি কাছের মানুষদের জন্যও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারবেন।
➡️ নিজেকে প্রাধান্য দিন, মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন।
➡️ রিল্যাক্সির সাথেই থাকুন ❤️
অর্পনা কর্মকার
ডিপার্টমেন্ট অফ ক্লিনিকাল সাইকোলজি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ইন্টার্ন সাইকোলজিস্ট, রিল্যাক্সি