প্রতিদিনের ব্যস্ত জীবনে রাগ অনেকটাই সাধারণ একটি অনুভূতি। তবে এটি যদি নিয়ন্ত্রণে রাখা না যায়, তাহসকালে রাস্তায় বের হতেই শুরু হয় গাঢ় গাড়ির সারি আর কানে বাজে হর্নের অবিরাম আওয়াজ। যেন ট্রাফিক সিগন্যালের শেষ নেই। সময় পেরিয়ে যাচ্ছে, অফিসে পৌঁছানো দূরের কথা, এই জ্যামে ফেঁসে থাকার যন্ত্রণাও যেন বেড়েই চলছে। আশপাশের মানুষজন, বাসের কন্ডাক্টরের অভদ্র আচরণ, প্রতিটি ছোটখাটো ব্যাপারেই যেন মেজাজটাকে আরও উত্তেজিত করে তুলছে।
হয়তো এই ঘটনা শুধু আমার নয়; অনেকেই আমরা এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হই প্রতিদিন। কিন্তু একবার কি ভেবে দেখেছি, কেন এমন পরিস্থিতিতে আমরা এত তাড়াতাড়ি রেগে যাই? আমাদের চারপাশের কিছু ঘটনা রাগকে উস্কে দেয়, কিন্তু মূলত এই সমস্যাটি আরও গভীর।
তাহলে কি করা যায় এই রাগের সাথে? কিভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব? আসুন, জেনে নিই।
রাগ কেন হয়?
রাগ সাধারণত তখনই হয় যখন কিছু বিষয় আমাদের মানসিক বা শারীরিক চাপ সৃষ্টি করে। বিভিন্ন কারণে আমরা রেগে যেতে পারি, যেমন:
- শহরের প্রতিদিনকার যানজট মেজাজের উপর বেশ বড় প্রভাব ফেলে।
- অফিসে বা রাস্তায় কারও আচরণ যদি অবজ্ঞাসূচক হয়, তা আমাদের রাগান্বিত করতে পারে।
- অতিরিক্ত দায়িত্ব, পরীক্ষার চাপ বা কাজের সময়সীমা রাগ বাড়ায়।
- ব্যক্তিগত সম্পর্কের বিভিন্ন সমস্যা রাগের অন্যতম কারণ হতে পারে।
রাগ কন্ট্রোল করার কার্যকর উপায়
রাগ কন্ট্রোল করা কঠিন মনে হলেও কিছু সহজ কৌশল কাজে লাগিয়ে আমরা তা কন্ট্রো্ল করতে পারি। নিচে কিছু প্র্যাকটিক্যাল টিপস দেয়া হলো।
1. গভীর শ্বাস নিন
রাগ অনুভব করার সাথে সাথেই গভীর শ্বাস নিন। ধীরে ধীরে শ্বাস নিন এবং মনের মধ্যে শান্তির অনুভূতি আনুন। এটি মস্তিষ্কে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়িয়ে মনকে ঠান্ডা করতে সাহায্য করে।
2. মাইন্ডফুলনেস বা মেডিটেশন চর্চা করুন
মেডিটেশন আপনার মনকে স্থির রাখতে সহায়তা করে। রাগ অনুভব করার আগে দৈনন্দিন জীবনে কিছুক্ষণ সময় বের করে মেডিটেশন করলে রাগ নিয়ন্ত্রণে আসবে।
3. বিরতি নিন এবং পরিস্থিতি থেকে সরে আসুন
রাগ লাগলে যদি সম্ভব হয় তাহলে পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে যান। নিজেকে কিছুটা সময় দিন। এতে উত্তেজিত মনটা শান্ত হয়ে আসবে।
4. পজিটিভ সেলফ-টক করুন
যখন রেগে যান তখন নিজের সাথে কথা বলুন। বলুন, “সব ঠিক হয়ে যাবে” বা “এটা বড় কিছু নয়।” নিজেকে বারবার শান্ত রাখার চেষ্টা করুন।
5. এক্সারসাইজ করুন
নিয়মিত ব্যায়াম করলে মন ও শরীর দুটোই সতেজ থাকে। এতে মানসিক চাপ কমে এবং রাগ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
6. জার্নালিং করুন
নিজের রাগের কারণগুলো লিখে ফেলুন। কেন রেগে যাচ্ছেন বা কোন পরিস্থিতিতে রাগ হয়, তা লিখে রাখলে নিজের রাগের কারণ বুঝতে পারবেন।
7. রিল্যাক্সি স্পেশাল সেশনের কথা ভাবুন
রিল্যাক্সির অভিজ্ঞ সাইকোলজিস্ট প্যানেল নিয়ে এসেছে স্পেশাল কাউন্সেলিং সেশন, যারা রাগ নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে কাজ করে থাকে। আপনি চাইলে তাদের সাথে যোগাযোগ করে এক বা একাধিক সেশন নিয়ে রাগ নিয়ন্ত্রণের উপায় শিখতে পারেন।
রাগ একটি সাধারণ অনুভূতি। তবে তা কন্ট্রোলে রাখতে না পারলে এর ফল মারাত্মক হতে পারে। শুধু আপনাকেই নয়, আপনার আশেপাশের মানুষকেও এটি প্রভাবিত করতে পারে। তাই রাগের কারণগুলো চিহ্নিত করে এবং কিছু কার্যকরী পদ্ধতি প্রয়োগ করে নিজেকে আরও স্থির ও শান্ত রাখতে চেষ্টা করুন।
আর যদি মনে করেন নিজের পক্ষে তা সম্ভব হচ্ছে না, তবে রিল্যাক্সির পেশাদার থেরাপিস্টদের সাহায্য নিতে পারেন। রিল্যাক্সি থেকে “রাগ কন্ট্রোল” নিয়ে স্পেশাল সেশনের মাধ্যমে আপনি শিখতে পারবেন কিভাবে রাগকে নিয়ন্ত্রণে রেখে নিজের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব আনতে পারেন।
👉 রিল্যাক্সি অ্যাপ ডাউনলোড করুন।
👉 কাউন্সেলিং সেশন বুক করুন।
রাগ নিয়ন্ত্রণ করুন, নিজের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনুন। কারণ আপনার মানসিক স্বাস্থ্যই আপনার শক্তি।