এংজাইটি অ্যাটাক VSপ্যানিক অ্যাটাক 

রিয়া একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পরীক্ষার আগের রাতে সে অনুভব করল যে তার পক্ষে কিছুতেই সিলেবাস শেষ করা সম্ভব নয়। তার মনের মধ্যে একের পর এক নেতিবাচক চিন্তা আসতে লাগল: “আমি পরীক্ষায় ফেল করব,” “আমার ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে।” এই এংজাইটি থেকে তার ঘুম চলে গেল, হার্টবিট বেড়ে গেল এবং মাথা ঘুরতে লাগল। এটি ছিল একটি এংজাইটি আ্যট্যাক এর উদাহরণ।

সুমন একজন কর্মজীবী ব্যক্তি। একদিন অফিসে কাজ করার সময়, কোনো কারণ ছাড়াই তার মনে হলো সে হয়তো হার্ট অ্যাটাক করবে। তার বুকের মধ্যে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হলো, শ্বাস নিতে কষ্ট হলো এবং তার মনে হতে লাগল সে মারা যাচ্ছে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সে হাসপাতালে চলে গেল, কিন্তু ডাক্তার জানালেন এটা কোন শারীরিক সমস্যা থেকে হয় নি বরং এটার সাথে জড়িত সাইকোলজিক্যাল ইস্যু- যা প্যানিক আ্যট্যাক নামে পরিচিত।

মানসিক স্বাস্থ্যের জগতে “এংজাইটি অ্যাটাক” এবং “প্যানিক অ্যাটাক” দুটি শব্দ প্রায়ই ব্যবহৃত হয়, কিন্তু এদের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম পার্থক্য রয়েছে। এগুলো বুঝতে পারলে নিজের মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও সচেতন হওয়া সম্ভব। আজ আমরা এই দুইটি সমস্যা নিয়ে আলোচনা করব।

এংজাইটি আ্যটাক (Anxiety Attack) কী?

এংজাইটি অ্যাট্যাক সাধারণত কোনো উদ্বেগজনক বা চাপময় পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় ঘটে। এটি ধীরে ধীরে শুরু হয় এবং দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। সাধারণত এংজাইটি অ্যাটাকের লক্ষণগুলো হলো:

  • অতিরিক্ত চিন্তা করা।
  • হার্টবিট বেড়ে যাওয়া।
  • শ্বাসকষ্ট বা দমবন্ধ ভাব।
  • ঘাম হওয়া।
  • শারিরীক ভাবে দুর্বল অনুভব করা।

এংজাইটি আ্যট্যাকের সময় করণীয়:

১. ব্রিদিং রিলাক্সেশন(শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম) করুন।

২. চিন্তাগুলোকে ইতিবাচক দিকে ঘুরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করুন।

৩. বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গে কথা বলুন।

৪. সাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিন।

প্যানিক আ্যটাক (Panic Attack) কী?

প্যানিক আ্যটাক হঠাৎ করে ঘটে এবং তীব্র আতংকের সৃষ্টি করে।  কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই এটি শুরু হতে পারে এবং সাধারণত এটি ১০ থেকে ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়। প্যানিক অ্যাটাকের লক্ষণগুলো হলো:

  • হঠাৎ শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
  • বুকের মধ্যে প্রচণ্ড ব্যথা বা চাপ।
  • মৃত্যুভয় বা “আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি” এমন অনুভূতি।
  • হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া।
  • পেটে অস্বস্তি বা মাথা ঘোরা।

প্যানিক আ্যটাকের সময় করণীয়:

1. নিজেকে বলুন, “এটি সাময়িক, আমি নিরাপদ।”

2. ৫-৪-৩-২-১ গ্রাউন্ডিং টেকনিক ব্যবহার করুন (পাঁচটি বস্তু দেখুন, চারটি স্পর্শ করুন, তিনটি শুনুন, দুটি গন্ধ নিন, একটি স্বাদ গ্রহণ করুন)।

3. গভীর শ্বাসের মাধ্যমে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করুন।

4.  সাইকোলজিস্টের সাহায্য নিন।

রিল্যাক্সি আপনার পাশে সবসময়

এংজাইটি আ্যটাক এবং প্যানিক আ্যটাক উভয়ই মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শের মাধ্যমে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যদি আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ এই সমস্যায় ভোগেন, তবে সাইকোলজিস্টের পরামর্শ নিন। এক্ষেত্রে রিলাক্সিতে আপনারা ঘরে বসেই নিজেদের পছন্দমতো সময়ে সাইকোলজিস্টের সাথে কথা বলতে পারবেন।

👉 রিল্যাক্সি অ্যাপ ডাউনলোড করুন

👉কাউন্সেলিং সেশন বুক করুন  💚

মনে রাখবেন, সচেতনতা এবং সহায়তা এই যাত্রার প্রথম ধাপ।

Comments

Write a comment